নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের স্টেশন রোডে জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে প্রায় ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন তারা।
এ সময় বিপুল সংখ্যক পুলিশ সড়কের দুধারে অবস্থান করলেও তারা নিরব থাকে। বিক্ষোভ চলাকালে সড়কের উভয়দিকে বিপুল সংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে নেতাকর্মীদেরকে সরিয়ে দিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এর আগে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে যে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি এই সরকারের দিন শেষ। এই সরকারের শেষ দিনে যারা সরকারের দালালি করবে, যারা অতিউৎসাহী হয়ে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে দায়িত্ব তাদেরকেই নিতে হবে। আমরা সেইসব কর্মকর্তাদের নাম তালিকাভূক্ত করছি। যারা জনগণের বুকে গুলি চালাচ্ছে, জনগণের রক্ত ঝরাচ্ছে, জনগণকে লাশে পরিনত করছে, গণতান্ত্রিক অধিকারে যারা হস্তক্ষেপ করছে, মানবাধিকার যারা লঙ্ঘন করছে তাদের কোনো রেহাই নেই।
সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স আরও বলেন, ৭ নভেম্বর দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণভাবে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সারাদেশের কোথাও পুলিশের ন্যাক্কারজনক হামলা আমরা দেখতে পাইনি। কিন্তু কিশোরগঞ্জে সেদিন কী এমন অবস্থার সৃষ্টি হলো যে, পুলিশ নির্বিচারে যুবদলের নেতাকর্মীদের ওপর গুলি করলো? তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ খবর নিয়ে দেখেছি, সেদিন এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি বা আমাদের নেতাকর্মীরা এমন কোনো উশৃংখল আচরণ করেনি, যে কারণে পুলিশকে সেখানে গুলি করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা দ্ব্যার্থহীন ভাষায় বলতে চাই, প্রশাসন হচ্ছে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের টাকায় যাদের বেতন হয়, জনগণের টাকায় যে গুলি কেনা হয়, সেই গুলি কেনো আজকে জনগণের বুকে করা হচ্ছে? আজকে কথায় কথায় গুলি করা যেন আওয়ামী লীগ সরকারের মজ্জাগত আভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেস আলী মামুন বলেন, প্রশাসনের পোশাক পড়ে রাজনেতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করবেননা। পারলে পোশাক খুলে আসুন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলম বলেন, প্রশাসন আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। কিন্তু শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উস্কানিতে পুলিশ হামলা ও গুলি চালিয়েছে। এরপর রাতে নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। এটা গণতান্ত্রিক সরকারের আচরণ হতে পারেনা।
গত ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনকালে পুলিশের সাথে বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে পুলিশসহ ২৯ জন আহত হন। পুলিশি হামলার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে জেলা বিএনপি। সংবাদ সম্মেলনে হামলার তীব্র নিন্দা, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবি জানানো হয়।
জেলা বিএনপির সভাপতি মো. শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রেজাউল করিম খান চুন্নু, এডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, এডভোকেট জালাল উদ্দিন, এডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন, এডভোকেট শরীফুল ইসলাম শরীফ, এডভোকেট মুনজুরুল ইসলাম জুয়েল প্রমুখ।