নিজস্ব প্রতিবেদক: অপহরণের ২৯ দিন পর কিশোরগঞ্জের মাদ্রাসাছাত্র লাবিবকে উদ্ধার ও দুজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গ্রেফতার দুজন হলেন বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার নয়াপাড়া গ্রামের মনির আহমেদের ছেলে আব্দুল্লাহ (২৬) ও কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার দেওড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে রাসেল (২৫)।
র্যাব সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জ শহরের রথখলা এলাকার নজরুল ইসলাম লিটনের ছেলে নিদানুর ইসলাম লাবিব (১৩) শহরের নগুয়া এলাকার একটি মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র। গত ২২ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় লাবিব। কিন্তু সে মাদ্রাসায় না যাওয়ায় রাত ৭টার দিকে মাদ্রাসার এক শিক্ষক তার মাকে ফোনে বিষয়টি জানান। বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজি করে তাকে না পেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে গত ২৫ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করে।
বিষয়টি কিশোরগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পকে জানালে ১৭ জানুয়ারি র্যাব তথ্য প্রযুক্তিসহ গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে নিশ্চিত হয় যে, লাবিবকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারীচক্র অপহরণ করেছে। র্যাব আরও জানায়, অপহরণকারীরা লাবিবকে নিয়ে ঢাকা, চট্টগ্রাম, ভৈরব ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে আটকে রাখে। ইতোমধ্যে অপহরণকারীচক্রের মূলহোতা আব্দুল্লাহ একাধিক মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ভিকটিমের পরিবারকে ফোন করে ৮ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা না দিলে ভিকটিমের আঙ্গুল কেটে দেওয়াসহ হত্যার হুমকি দেয়। নিরূপায় হয়ে তার পরিবার বিকাশ নম্বরে দুই কিস্তিতে ২৮হাজার টাকা পাঠায়। অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবি সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করেন।
এদিকে বিকাশ নম্বরের সূত্র ধরে র্যাব আসামির অবস্থান নিশ্চিত হয়। গত শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাত সোয়া ৮টার দিকে সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানার ভার্থখোলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে লাবিবকে উদ্ধার এবং অপহরণের সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণের সাড়ে ২৪ হাজার টাকাও উদ্ধার করে র্যাব। পরে ভিকটিম ও গ্রেফতার দুজনকে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
র্যাব কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের কোম্পানী অধিনায়ক মো. আশরাফুল কবির জানান, গ্রেফতার দুজন অপহরণকারীচক্রের মূলহোতা। তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে নির্ধারিত ব্যক্তিকে টার্গেট করে এ ধরণের অপরাধমূলক কাজ করে বেড়ায়।