নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় প্রতিবারের মতো এবারও ঈদুল আযহার বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপমহাদেশের অন্যতম বৃহত্তম ও প্রাচীন ঈদগাহ শোলাকিয়ায় এবার অনুষ্ঠিত হয়েছে ১৯৭ তম ঈদুল আযহার জামাত। সকাল ৯ টায় জামাত শুরু হয়। জামাতে ইমামতি করেন কিশোরগঞ্জ মারকায মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান।
শোলাকিয়া ঈদগাহের রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরু হওয়ার আগে শটগানের গুলি ফুটিয়ে জামাত শুরু করা হয়।
নামাজ শেষে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা ও দেশের কল্যাণে নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তিদের জন্য দোয়া করা হয়। দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য মহান আল্লাহর দয়া কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদজামাত অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগে থেকেই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রশাসন। ঈদ জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ড্রোন ক্যামেরা, বাইনোকুলারসহ দুই প্লাটুন বিজিবি, র্যাব, বিপুল সংখ্যক পুলিশসহ অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন করা হয়। এ ছাড়াও মাঠে ওয়াচ টাওয়ার এবং সিসি ক্যামেরা দ্বারা পুরো মাঠ মনিটরিং করা হয়। প্রতিটি মুসল্লিকে তল্লাশি করে মাঠে প্রবেশ করানো হয়।
জামাত শেষে কোরবানির বাধ্যবাধকতা থাকা এবং আশেপাশের মসজিদে আগেই জামাত হওয়ায় ঈদুল ফিতরের তুলনায় ঈদুল আযহায় শোলাকিয়ায় মুসল্লির সংখ্যা কম হয়।
এ্যাম্বুলেন্সসহ মেডিকেল টিম এবং ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট সার্বক্ষণিক মোতায়েন ছিল। বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটসহ পুলিশের কুইক রেসপন্স টিমও প্রস্তুত রাখা হয়। স্কাউটস সদস্যরা স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
দূরের মুসল্লিদের সুবিধার্থে ঈদের দিন ময়মনসিংহ টু কিশোরগঞ্জ ও ভৈরব–টু কিশোরগঞ্জ রুটে শোলাকিয়া এক্সপ্রেস নামে দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।
কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং মুসল্লিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন শোলাকিয়া ঈদগাহের কাছে আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের চেকপোস্টে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশের দুজন কনস্টেবল আনসারুল হক ও জহিরুল ইসলাম, স্থানীয় গৃহবধূ ঝর্ণা রাণী ভৌমিক ও আবির রহমান নামে এক জঙ্গি নিহত হন।
জঙ্গি হামলার পর থেকেই প্রতি বছর ঈদেরদিন শোলাকিয়ায় বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়।