ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে জহিরুল্লাহ (৫০) নামে একজন নিহত ও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার দুপুরে মেন্দিপুর গ্রামে উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শেফায়েত উল্লাহ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
নিহত জহিরুল্লাহ মেন্দিপুর গ্রামের সাহু মিয়ার ছেলে। তিনি শেফায়েত উল্লাহ পক্ষের সমর্থক ছিলেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয় স‚ত্রে জানা গেছে, শেফায়েত উল্লাহ বর্তমানে সাদেকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তোফাজ্জল হোসেন একই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। দুজনই মৌটুপি গ্রামের বাসিন্দা। আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এর আগেও একাধিকবার তাদের মধ্যে সংঘর্ষ এবং বেশ কয়েকজন নিহত হয়েছেন। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার আগমুহ‚র্ত পর্যন্ত সাদেকপুর ইউনিয়নের নিয়ন্ত্রণ শেফায়েত উল্লাহর ছিল। তিনি দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর তোফাজ্জল হোসেন এলাকায় সরব হন। মঙ্গলবার বিকালে তিনি এলাকায় মিছিল ও সভা করেন। সভা থেকে শেফায়েত উল্লাহকে সতর্ক করা হয়। সভা শেষ হওয়ার পর মেন্দিপুর গ্রামে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এর জের ধরে বুধবার দুপুরে দুই পক্ষই মেন্দিপুর গ্রামে দেশিয় অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় জহিরুল্লাহ বুকে বল্লমবিদ্ধ হয়ে মারা যান। সংঘর্ষে উভয়পক্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতরা ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
শেফায়েত উল্লাহর কর্মী–সমর্থকদের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তোফাজ্জলের লোকজন আওয়ামী লীগের কর্মী–সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলার সময় বল্লমের আঘাতে জহিরুল্লাহ মারা গেছেন।
তবে সংঘর্ষের সঙ্গে নিজের কোনো সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে তোফাজ্জল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, খুনের মিথ্যা মামলার আসামি করার জন্যই প্রতিপক্ষ তার নাম জড়াচ্ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি পক্ষের উস্কানিতেই এ সংঘর্ষ হয়েছে। তবে তাদের বিরোধ চলে আসছে এরও আগে থেকেই।