নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রয়াত আবু খালেদ পাঠানের নামে গঠিত ফাউন্ডেশনে উদ্যোগে প্রথমবারের মতো ‘আবু খালেদ পাঠান সাহিত্য পুরস্কার’ ২০২৪ ঘোষণা করা হয়েছে। এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন বিশিষ্ট কবি ও সংগীতজ্ঞ কফিল আহমেদ এবং কবি ও প্রাবন্ধিক আফরোজা সোমা।
আবু খালেদ পাঠান সাহিত্য পুরস্কার কমিটি ২০২৪ এর আহ্বায়ক লেখক ও সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রত্যেককে পুরস্কারের নগদ অর্থমূল্য ২৫ হাজার টাকা, ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করা হবে। শিগগির মনোনীত দুজনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার তুলে দেওয়া হবে।
কফিল আহমেদ: পুরস্কারপ্রাপ্তদের মধ্যে কফিল আহমেদ একজন গুণী কবি ও সংগীতশিল্পী। ১৯৬২ সালে তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মূলত লিটল ম্যাগাজিনকেন্দ্রিক সাহিত্যচর্চায় মনযোগী ছিলেন। জড়িত ছিলেন সাহিত্য কাগজ ‘পূর্ণদৈর্ঘ্য’, ‘নদী’, ‘ফু’, ‘দামোদর’, ‘নান্দীপাঠ’ এবং ‘মান্দার’-এর সঙ্গে। ‘ঘোড়াউত্রা’র উদ্যোগে কফিল আহমেদ–এর গানের সংকলন ‘পাখির ডানায় দারুণ শক্তি গরুর চোখে মায়া’ প্রকাশ পায় ২০০১ সালে। এরপর ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘উড়কি’ থেকে প্রকাশিত হয় ‘কবিতা গদ্য কথা’, ও ‘রোজ তাই কথা বলে আমার কবি’ শিরোনামের দুটি গ্রন্থ।
আফরোজা সোমা: কবি ও প্রাবন্ধিক আফরোজা সোমা পেশায় একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। অধ্যাপনা করছেন সাংবাদিকতা ও মিডিয়া স্টাডিজ বিষয়ে। ‘জেন্ডার’ ও ‘গণমাধ্যম‘ তার কাজের অন্যতম প্রধান বিষয়। এ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে তার ৭টি গ্রন্থ। এর মধ্যে কবিতার বই ৫টি এবং প্রবন্ধ ও গবেষণাগ্রন্থ ২টি। জেন্ডার ও গণমাধ্যম বিষয়ক তার প্রবন্ধ–গ্রন্থের নাম ‘বেশ্যা ও বিদুষীর গল্প’ ২০২১ সালে এবং গণমাধ্যম–তত্ত্ব ও নজরদারি বিষয়ে ২০২৪ সালে বেরিয়েছে তার গবেষণা–প্রবন্ধ গ্রন্থ ‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং ম্যাকলুহান: গণমাধ্যম, নয়ামাধ্যম ও সমাজ’। তার কবিতার প্রথম বই ‘অন্ধঘড়ি’ প্রকাশ হয় ২০১০ সালে।
উল্লেখ্য, বিশিষ্ট চিন্তক ও শিক্ষাবিদ আবু খালেদ পাঠান ১৯৩৭ সালের ২৬ জুন বৃটিশ ভারতের তদানিন্তন ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমায় জন্মগ্রহণ করেন। পেশাগত জীবনে তিনি প্রায় ৩৫ বছর শিক্ষকতা করেছেন। যুক্ত ছিলেন সাংবাদিকতার সঙ্গেও। কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠায় অগ্রগণ্য ভূমিকা রেখেছেন তিনি। লেখালেখি করেছেন স্থানীয় ও জাতীয় দৈনিকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকা ও সাময়িকীতে। এছাড়াও জেলার বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের গুরুভার পালন করেছেন নিষ্ঠার সঙ্গে। ২০২৩ সালের ১১ অক্টোবর তিনি প্রয়াত হন।