নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ব্যাংকের ভিতর একে একে ছয়জন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তোলপাাড় শুরু হয় এ নিয়ে। অজানা আশঙ্কায় সংশ্লিষ্টদের মাঝে দেখা দেয় আতঙ্ক। অবশেষে জানা গেল জেনারেটর থেকে নির্গত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাসে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তারা।
রবিবার দুপুরে কুলিয়ারচর বাজারে হাবিব কমপ্লেক্সের দ্বিতীয় তলায় আইএফআইসি ব্যাংকের উপ–শাখায় ঘটনাটি ঘটে।
ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, নিরাপত্তাকর্মী কামাল হোসেন ধীরে ধীরে ক্যাশ কাউন্টারের দিকে এগিয়ে যান এবং টেলিফোন ধরার চেষ্টা করেন। টেলিফোন ধরতে গিয়ে কাচ ভেঙে ফেলেন তিনি। এ অবস্থায় একজন গ্রাহক ব্যাংকে প্রবেশ করলে কামাল হোসেন তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। ওই গ্রাহক তখন দ্রæত নিচে নেমে যান। কিছুক্ষণ পর আরেক নিরাপত্তাকর্মী জুয়েল মিয়া এসে অন্যদের সহযোগিতায় অসুস্থ ব্যক্তিদের বাইরে বের করে আনেন।
ভৈরব–কুলিয়ারচর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুস সাকিব সোমবার ফুটেজের এসব তথ্যের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ফুটেজ পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে যে, ঘটনাটি নাশকতা কিংবা ডাকাতির ঘটনাও নয়। ব্যাংকের টাকা পয়সা এদিক–ওদিক হয়নি। ভল্ট ও ক্যাশবাক্স অক্ষত রয়েছে।
তিনি আরো জানান, ব্যাংকের ভেতরের একটি বদ্ধ ঘরে রাখা ছিল জেনারেটর। রবিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চার ঘণ্টা ধরে চলছিল। ধারণা করা হচ্ছে, সেখান থেকেই বিষাক্ত কার্বন মনোক্সাইড গ্যাস নিঃসরণ হয়ে থাকতে পারে। আর এতেই তারা অজ্ঞান হয়ে পড়েন। সিআইডির একটি টিম আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে গেছে। তারা তদন্ত করে একটি রিপোর্ট দেবে বলেও জানান তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরো জানান, অসুস্থ ছয়জন এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বিকল্প তিনজন কর্মকর্তা ও একজন সিকিউরিটি গার্ড দিয়ে ব্যাংকের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।
অসুস্থ ছয়জন হলেন ব্যংকের ম্যানেজার মোস্তাফিজুর রহমান, কর্মকর্তা সিয়াম রহমান, হোসনা বেগম, মেরিন আক্তার, সৌমিক জামান খান ও সিকিউরিটি গার্ড কামাল মিয়া।
পুলিশ ও স্থানীয় স‚ত্রে জানা গেছে, রবিবার দুপুর দেড়টায় কুলিয়ারচরে আইএফআইসি ব্যাংকে কয়েকজন গ্রাহক গিয়ে দেখতে পান ৬ কর্মকর্তা কর্মচারী ব্যাংকের ভিতর অসুস্থতা বোধ এবং বমিও করেছেন। এসময় বিষাক্ত দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। ধীরে ধীরে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হেলাল উদ্দিন জানান, খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, কুলিয়ারচর থানা পুলিশ, র্যাব, ডিবি পুলিশ ও বাজিতপুর ক্যাম্পের সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। প্রথমে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হলেও তদন্তে জেনারেটরের গ্যাসের বিষয়টি জানা যায়।