নিজস্ব প্রতিবেদক: কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড শাহ আলম বলেছেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলে, চার মূলনীতির কথা বলে তাদেরকে পতিত স্বৈরাচারের দোসর বলে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে। মনে রাখতে হবে মুক্তিযুদ্ধ, চার মূলনীতি আর আওয়ামী লীগ এক জিনিস নয়। এই বিতর্কে লাভবান হচ্ছে পতিত স্বৈরাচার। এই বিতর্ক যারা সৃষ্টি করেছে, প্রকৃতপক্ষে তারাই পতিত স্বৈরাচারের দোসর।
তিনি শনিবার সকালে কিশোরগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সভায় উদ্বোধনী বক্তব্যে এ কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাহাত্তরের সংবিধান, জাতীয় চার মূলনীতি আর জাতীয় সঙ্গীত পাল্টে দিতে হবে, এ রকম কোন এজেন্ডা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে ছিলনা। এজেন্ডা ছিল গণতন্ত্র আর স্বৈরাচারের বিদায়। কিন্তু ৫ আগস্টের পর এ রকম বিতর্ক নিয়ে আসা হয়েছে। ফলে ছাত্র-জনতার যে বৃহত্তর ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল, এই বিতর্কের ফলে তাদের বেশিরভাগ অংশ সরে গেল। এতে লাভবান হল পতিত স্বৈরাচার।
কমরেড শাহ আলম বলেন, এই সরকার নির্বাচন নিয়ে ছলচাতুরি করছে। আমরা বলেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। বিএনিপিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আর একটি দলের নেতা লন্ডনে বসেও ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বলেছেন। কিন্তু ইউনূস সাহেব বলেছেন, এপ্রিলে নির্বাচনের কথা। জাপানে গিয়ে ইউনূস সাহেব বললেন, সংস্কার অল্প হলে নির্বাচন ডিসেম্বরে হবে। আর সংস্কার মৌলিক হলে জুনে নির্বাচন। তিনি সংস্কারের কথা বলে যে ধোকা দিচ্ছিলেন, সেটা প্রকাশ হয়ে গেল। প্রকৃতপক্ষে তিনি ডিসেম্বরে নির্বাচন চাননা বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এই সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে উল্লেখ করে শাহ আলম বলেন, এই সরকারের আমলে নিরপেক্ষ, অবাধ নির্বাচন হবে কিনা প্রশ্ন তুলছে জনগণ। আগের সরকার ১৬ বছর গণতন্ত্র দেয়নি। এই সরকারও ভোটের অধিকার দেবে কিনা নতুন করে মানুষ এমন প্রশ্ন তুলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে মানুষের ভোটে সরকার গঠন করতে হবে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন মানুষের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই, আইনের শাসন নেই, চলছে মব সন্ত্রাস। হাসিনার সময় ভয়ের রাজনীতি ছিল, এখনো ভয়ের রাজনীতি থেকে বের হতে পারেনি। দেশি বিদেশি বিনিয়োগ বন্ধ। এভাবে দেশ চলতে পারেনা। এ অবস্থা চলতে থাকলে কমিউনিস্ট পার্টি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আবারো গণ আন্দোলন গড়ে তুলবে।
কিশোরগঞ্জ জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আব্দুর রহমান রুমীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় পার্টির বিভিন্ন ইউনিটের সদস্যরা অংশ নিচ্ছেন। সভা সঞ্চালনা করছেন জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রনজিত কুমার সরকার।
এর আগে জেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী জাতীয় সঙ্গীত ও গণসঙ্গীত পরিবেশন করে। কমিউনিস্ট পার্টির ত্রয়োদশ কংগ্রেস সফল করার লক্ষ্যে কিশোরগঞ্জ শহরের একরামপুরস্থ একটি কনভেনশন সেন্টারে সাধারণ সভাটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।