নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করেছে একটি অংশ।
শনিবার দুপুরে নিকলী উপজেলা সদরে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে নিকলী নতুন বাজারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করে তাদেরকে কোনো কার্যক্রম চালাতে দেওয়া হবেনা বলে ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নবগঠিত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয় আত্মীয়করণ, তোষামোদকারী এবং আওয়ামী দোসরদেরকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কমিটির কোষাধ্যক্ষ আবু বাক্কার, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহ, প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক শাহ মো. জাকির হোসেন, সদস্য ফরিদ উদ্দিন ও শাহিন ভূইয়া কোনোদিন বিএনপি করেননি এবং কোনো ওয়ার্ড কমিটিতেও ছিলেননা। অথচ ত্যাগীদেরকে বাদ দিয়ে তাদেরকে উপজেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রণোদনার বিনিময়ে সিনিয়রদেরকে ডিঙ্গিয়ে জুনিয়রদেরকে কমিটিতে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য নাসির উদ্দীন আসলাম বলেন, আওয়ামী সরকারের সময় তিনি চারটি মামলার আসামি হয়ে ৪ মাস ১৮ দিন কারাভোগ করেছেন। জেলা কমিটির সভাপতি শরীফুল আলম ও তিনি একইসঙ্গে একই কারাগারে ছিলেন। অথচ তাকেও কমিটিতে রাখা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য কামরুল হাসান অভিযোগ করেন, নতুন কমিটির সভাপতির ২১ থেকে ২২ জন এবং সাধারণ সম্পাদকের ৬ জন আত্মীয়কে কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। আসন্ন নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীকে পরাজিত করতেই টাকার বিনিময়ে আওয়ামী দোসরদেরকে নিয়ে কমিটি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। কোনো কোনো পদের বিনিময়ে ৮ লক্ষ থেকে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে বলে সাংবাদিকদেরকে জানান তিনি।
কমিটি প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, সংশোধন না করা পর্যন্ত জেলা বিএনপিকেও নিকলীতে আসতে দেওয়া হবেনা।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য আলম মেম্বার, যুবদলের সদস্য মোজাম্মেল হক, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক হাতেম আলী, তাঁতীদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুক্তার হোসেন প্রমুখ।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম কমিটি গঠনে কিছুটা হেরফের হয়েছে স্বীকার করেন। ১২ লক্ষ টাকার বিনিময়ে মাসুক মিয়াকে সিনিয়র সহ সভাপতি করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাকে কমিটিতে রাখার বিষয়ে আমারও আপত্তি ছিল। কিন্তু উপজেলা থেকে যেভাবে কমিটি সাজিয়ে আনা হয়েছে, সেভাবেই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরপরও কমিটি কিছুটা সংশোধন করা হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জানুয়ারি নিকলী উপজেলা বিএনপির সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। সম্মেলনের প্রায় সাত মাস পর গত ২৬ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম।