নিজস্ব প্রতিবেদক: কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া আয়শা আহাদ দাখিল মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচন ছাড়াই জাল কাগজে কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার সুপার নিজের দুর্নীতি ঢাকতেই এমন জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন।
আজ শনিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন মাদ্রাসার আজীবন দাতা মো. আজিজুর রহমান।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদ্রাসার সুপার ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দৃশ্যমান কোন প্রকার নির্বাচন না করেই জাল কাগজপত্র সৃষ্টি করে মাদ্রাসার বর্তমান সুপারিনটেনডেন্ট অবৈধ কমিটি অনুমোদনের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করেন। গত ৬ এপ্রিল কমিটি অনুমোদনও দেয় শিক্ষা বোর্ড।
লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করা হয়, মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুল খালেক ২০১৬ সালে প্রায় চার লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হন। পরে এক লাখ টাকা ফেরত দেন। কিন্তু বাকি টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানালে ভারপ্রাপ্ত সুপার তার বিরুদ্ধে আদালতে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেন। পরে ৫০ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে জামিন লাভ করেন তিনি। এ অবস্থায় তৎকালীন পরিচালনা কমিটি ২০১৭ সালের ৩ জুন সুপারকে অপসারণের জন্য কাগজপত্র শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করলেও রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা নেয়নি বোর্ড।
এ সুযোগে সাময়িক বরখাস্তে থাকা সুপার আব্দুল খালেক মামলার বাদী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার নজরুল ইসলামের সাথে গোপনে আতাত করে ফেলেন। ফলে মামলার বাদী পর পর পাঁচটি তারিখে গড় হাজির থাকায় মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। এ অবস্থায় সুপারের আত্মসাৎ করা আরও প্রায় আড়াই লাখ টাকা উদ্ধারের পথ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়।
অপরদিকে ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে আজিজুর রহমান সভাপতি নির্বাচিত হন। কিন্তু বরখাস্তে থাকা সুপারের যোগসাজশে ভারপ্রাপ্ত সুপার কমিটির অনুমোদন আনেননি বলেও অভিযোগ করা হয়। পরে ২০১৮ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ভারপ্রাপ্ত সুপারের কাছ থেকে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সুপার আব্দুল খালেক।
সংবাদ সম্মেলনে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে কমিটি বাতিলসহ সংশ্লিষ্টদের দুর্নীতির বিচার দাবি করা হয়।
তবে এ সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুল খালেক। তিনি জানান, একটি মহল তার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের মিথ্যা অভিযোগ এনে তাকে ফাসানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। সাজানো আত্মসাতের ঘটনা মীমাংসা করার জন্য তিনি দেড় লাখ টাকা দিয়েছেন বলে স্বীকার করেন।
নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটির নির্বাচন হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।