সাইফউদ্দীন আহমেদ লেনিন: ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে পুলিশ একাত্তরের ন্যায় প্রতিরোধ করে যাবে।
তিনি আজ রবিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা পুলিশ আয়োজিত বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, পঁচাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি দেশে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, যে কারণে মুক্তিযোদ্ধারা মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতে পারতেননা। তিনি প্রশ্ন রাখেন, কারা গোলাম আযমকে নাগরিকত্ব দিয়ে দেশে ফিরিয়ে এনেছে? কারা নিজামী-মোজহিদদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিল? কারা রাজাকার শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী করেছিল?
ডিবি প্রধান আরও বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করে ঘাতকরা তার লাশ ঢাকায় না এনে অজপাড়া গাঁ টুঙ্গিপাড়ায় দাফন করেছিল। তারা ভেবেছিল, সেখানে কেউ কোনদিন তার খোঁজ করবেনা। ইনডেমনিটি জারি করে তার বিচারের পথ রুদ্ধ করতে চেয়েছিল। কিন্তু মানুষ এখন সত্য ইতিহাস জানতে পারছে। টুঙ্গিপাড়া এখন তীর্থস্থানে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়েছে। অথচ শিশুকালে আমাদেরকে পাঠ্যবইয়ে পড়তে হয়েছে, কেউ একজন বাঁশিতে ফুঁক দেওয়ার কারণে মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল ! এমন তামাশাও দেখতে হয়েছে জাতিকে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ রবিবার কিশোরগঞ্জে ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ সদস্যকে সংবর্ধনা দিয়েছে জেলা পুলিশ। পুলিশ লাইন্স ড্রিলসেডে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার)।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আবুল কালাম আজাদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মো. জিল্লুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট এম এ আফজল, গুরুদয়াল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জামালুর রহমান, সিআইডির পুলিশ সুপার সৈয়দ ফরহাদ, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আসাদ উল্লাহ ও মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া পুলিশের ৩৫ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যদেরকে সংবর্ধনা হিসেবে বিশেষ উপহারসামগ্রি প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন জেলা গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট ভূপেন্দ্র ভৌমিক দোলন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার কামাল, মুক্তিযুদ্ধের গবেষক ও বিশিষ্ট লেখক জাহাঙ্গীর আলম জাহান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিছ বেগম, জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণব কুমার সরকার, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার সরকার, জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন প্রমুখ।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মোস্তাক সরকার।