নিজস্ব প্রতিবেদক: কমিটি গঠনের উদ্যোগে কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগে নতুন করে প্রাণ সঞ্চার হয়েছে। সক্রিয়দের পাশাপাশি তৎপর হয়েছেন নিস্ক্রিয়রাও।
দীর্ঘ এক যুগ পর কিশোরগঞ্জ জেলা যুবলীগের পদপ্রত্যাশীদের জীবন বৃত্তান্ত আহ্বান করেছে যুবলীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ। এর পর থেকেই নিজ নিজ বলয়ের কর্মীদের নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশিরা। কাঙ্ক্ষিত পদ পেতে কেন্দ্র থেকে ব্যক্তি পর্যায়েও দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন অনেকে। সংগঠনে এখন একটাই মূল আলোচনার বিষয়, কারা আসছেন জেলা যুবলীগের নতুন নেতৃত্বে।দীর্ঘ ১২ বছর পর নতুন নেতৃত্ব পাবে, এ আশায় নেতা–কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ।
গত ১২ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় যুবলীগ আগ্রহী সভাপতি–সম্পাদক প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করে। জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ১৮ জানুয়ারি ছিল জীবনবৃত্তান্ত জমা দেওয়ার শেষ দিন। মোট ৩৫ জন পদপ্রত্যাশী তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। এরমধ্যে সভাপতি পদে ৮ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ২৭ জন।
সভাপতি পদে বেশ কয়েকজন আলোচনায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে জেলা যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল, যুগ্ম আহবায়ক রুহুল আমিন খান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বছির উদ্দীন রিপন অন্যতম।
১৯৮৪ সালে ছাত্র রাজনীতিতে আসা মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল নব্বইয়ের গণ–আন্দোলনসহ একাধিকবার কারাবরণসহ বিএনপি-জামাতের হামলায় নির্যাতিত হয়েছেন। অমায়িক আচরণ ও মিশুক স্বভাবের কর্মিবান্ধব নেতা হিসেবে তার খ্যাতি রয়েছে।তাছাড়া বিগত কয়েক বছর ধরে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে ব্যাপক গণসংযোগ ও সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড তাকে প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রাখবে বলেও অনেকের ধারণা।
অপরদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদে ডজন খানেক নেতার নাম শোনা গেলেও আলোচনায় রয়েছেন জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এডভোকেট শহিদুল ইসলাম হুমায়ুন ও শফিকুল গণি ঢালী লিমন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ–সভাপতি আসিফ হাসান মল্লিক রাজন, জেলা ছাত্র লীগের সাবেক সভাপতি শফিকুল গণি ঢালী লিমন, গুরুদয়াল কলেজ ছাত্রসংসদের সাবেক খেলাধুলা সম্পাদক রাশেদ জাহাঙ্গীর পল্লব, ছাত্র লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ আফাকুল ইসলাম নাটু, খায়রুজ্জামান পুটনসহ বেশ কয়েকজন।
সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আসিফ হাসান মল্লিক রাজন বলেন, কৈশোর বয়স থেকেই ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হই। পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন শেষে জেলা ছাত্রলীগের সহ–সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। এবার জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছি।
জেলা যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০০০ সনে আবুল বাছির চুন্নুকে সভাপতি ও আমিনুল ইসলাম বকুলকে সাধারণ সম্পাদক করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। সভাপতির মৃত্যুর পরও দীর্ঘদিন এ কমিটি দায়িত্ব পালন করে। ২০১২ সালের জুলাই মাসে আমিনুল ইসলাম বকুলকে আহ্বায়ক, এডভোকেট মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল ও রুহুল আমিন খানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট জেলা কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় কমিটি। ৯০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার কথা থাকলেও সেই আহ্বায়ক কমিটি প্রায় এক যুগ ধরেই দায়িত্ব পালন করছে।
সভাপতি প্রার্থী বছির উদ্দীন রিপন বলেন, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে সামনের সারিতে থেকে দায়িত্ব পালন করেছি। দলের প্রতি আনুগত্য থেকে কাজ করে যাচ্ছি। দল মূল্যায়ণ করবে বলে তিনি আশাবাদী।
জেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মীর আমিনুল ইসলাম সোহেল জানান, সভাপতি পদে ৮ জন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ২৫ জনেরও বেশি জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন। আগামী মার্চে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।
কেমন নেতৃত্ব প্রত্যাশা করেন, এমন প্রশ্নে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শন ও আদর্শ যারা ধারণ করবেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যারা আস্থা রাখতে পারবেন এবং তৃণমূল থেকে জেলা পর্যন্ত যুব সমাজকে যারা দক্ষ মানবসম্পদে পরিণত করতে সচেষ্ট থাকবেন, তাদেরই নেতৃত্বে আসা উচিত।