নিজস্ব প্রতিবেদক: বিভিন্ন স্তরের নেতাদের উপস্থিতি সত্বেও শুধুমাত্র সাধারণ সম্পাদক নিজের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করলেন। সমাপ্তি ঘোষণার পর বক্তা হিসেবে সংসদ সদস্যের নাম প্রস্তাব করা হয়। সংসদ সদস্যের বক্তব্য শেষে দ্বিতীয়বারের মত সমাপ্তি ঘোষণা করা হয় কর্মসূচি। পরে অনুষ্ঠানস্থলে এসে উপস্থিত হন দলের সভাপতি।
এমনই ছন্দপতনের মধ্য দিয়ে সোমবার কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও প্রাক্তন জন প্রশাসনমন্ত্রী প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙচুর করার প্রতিবাদে জেলা আওয়ামী লীগ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সোমবার বেলা ১১টায় শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম চত্বরে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা, মিঠামইন, অষ্টগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা মানববন্ধনে উপস্থিত হলেও শুধুমাত্র জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এম. এ আফজল বক্তব্য দিয়ে কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করেন। সমাপ্তি ঘোষণার পর এসব নিয়ে গুঞ্জন শুরু হলে বক্তা হিসেবে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক এমপির নাম ঘোষণা করা হয়। সংসদ সদস্য তৌফিকের বক্তব্যের পর আবারও মাইক হাতে দ্বিতীয় বারের মত সভা সমাপ্তি ঘোষণা করেন সাধারণ সম্পাদক এম. এ আফজল। এরপরই কর্মসূচিস্থলে এসে উপস্থিত হন জেলা কমিটির সভাপতি এডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহান।
এ ব্যাপারে সভাপতি কামরুল আহসান শাহজাহান বলেন, অসুস্থতার কারণেই মানববন্ধনে আসতে একটু বিলম্ব হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতাকর্মী বলেন, অনেক নেতা উপস্থিত হওয়া সত্বেও তাদেরকে বক্তব্য রাখার সুযোগ না দিয়ে অনুষ্ঠানের সৌন্দর্যই নষ্ট করা হয়েছে। তাছাড়া সংসদ সদস্য যথাসময়ে উপস্থিত থাকা সত্বেও বক্তা হিসেবে তার নাম ঘোষণা ছাড়াই অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করায় ছন্দপতন ঘটেছে। যদিও সমাপ্তি ঘোষণার পর তাকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। সভাপতির জন্য অপেক্ষা না করে তড়িঘড়ি করে সভা শেষ করায় অনেক নেতাকর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি দিলারা বেগম আসমা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট জিল্লুর রহমান, পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া, সাবেক মেয়র নূরুল ইসলাম নূরু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ আশফাকুল ইসলাম টিটু, প্রচার সম্পাদক লুৎফুল আরেফিন গোলাপ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা যুব লীগের আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম বকুল, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আজিজ, আইন বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সৈয়দ শাহজাহান, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট আবু নাসের ফারুক সঞ্জু, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক নূর আজিজ খান বাবু, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এনায়েত করিম অমি, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাছুম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার কামাল, কেন্দ্রিয় ছাত্র লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর খোকন, জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিলকিস বেগম, জেলা ছাত্র লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মোল্লা সুমন, সাধারণ সম্পাদক ফয়েজ ওমান খান, সাংগঠনিক সম্পাদক লুৎফুর রহমান নয়ন, করিমগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এমরান আলী ভূইয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আবু সাঈদ ইমাম।
এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এম. এ আফজল বলেন, মানববন্ধন সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। এ কারণেই অন্যদেরকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ হয়নি। তাছাড়া এডভোকেট কামরুল আহসান শাহজাহানের সভাপতিত্বে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে তিনি জানালেও কর্মসূচি শেষে সভাপতির উপস্থিত হওয়া প্রসঙ্গটি তিনি এড়িয়ে যান।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ম্যুরাল ভাঙচুর করে।